বিশ্বকাপ ক্রিকেটে টানা পঞ্চম জয় পেলো স্বাগতিক ভারত। ধর্মশালায় গুরুত্বপুর্ণ খেলায় ভারত ৪ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। আগে ব্যাট করে ড্যারিল মিচেলের সেঞ্চুরিতে ২৭৩ রানে অলআউট হয় কিউইরা। জবাবে ভিরাট কোহলির ৯৫ রানে ৪৮ ওভারে জয় পায় স্বাগতিক দল। ম্যাচ সেরা হন ভারতের মোহাম্মদ শামী।

কিউইদের দেওয়া ২৭৫ রানের লক্ষ্যে ভারতের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন এই দুই ওপেনার। আক্রমণের ধারাবাহিকতায় অর্ধশতকের খুব কাছেই ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। তবে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে এসে হতাশা উপহার দেন রোহিত।

লকি ফার্গুসনের ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন তিনি। তার বিদায়ের পর পরই ফেরেন আরেক ওপেনার গিল। এ ব্যাটার করেন ২৬ রান। এরপর চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে নামা শ্রেয়স আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন বিরাট কোহলি। ৫২ রানের জুটি গড়েন এই দুইজন। তবে দলীয় ১২৮ রানে আইয়ার আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

আইয়ার আউট হলেও দারুণ ফর্মে থাকা কোহলি পঞ্চম উইকেটে রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে দেখা পান আরেকটি হাফ সেঞ্চুরির। তবে রাহুল কোহলির ৫৪ রানের জুটি ভাঙে দলীয় ১৮২ রানে। ষষ্ট উইকেটে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হওয়া সূর্যকুমার যাদব ফেরেন ২ রানে।

তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে শতকের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু ব্যাক্তিগত ৯৫ রানে শচীনকে ছোয়ার আক্ষেপ নিয়ে আউট হন কিং কোহলি। শেষে মোহাম্মদ শামিকে নিয়ে বাকি পথ হেসেখেলে পাড়ি দেন রবীন্দ্র জাদেজা। এতে ১২ বল হাতে রেখেই চার উইকেটের জয় পায় রোহিত শর্মার দল। আর টানা পাচ জয়ে নিজেদের শীর্ষ স্থান মজবুত করল ভারত।

এর আগে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুরুতেই ধাক্কা খায় তারা। দুই ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়াং। এর মধ্যে ৯ বল খেলে সিরাজের বলে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফেরেন কনওয়ে। এরপর দলীয় ১৯ রানে ইয়াং (১৭) এর উইকেট হারায় কিউইরা। তাকে সরাসরি বোল্ড করে ফেরান শামি।

চাপের মুখে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের হাল ধরেন রাচিন রবীন্দ্র ও মিচেল। দুজনের জুটিতে আসে ১৫৯ রান। এর মধ্যে ৮৭ বলে ৭৫ রান করে শামির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন রবীন্দ্র। মাঝে কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম ফেরেন ব্যক্তিগত ৫ রানে। তবে মিচেল ঠিক ১০০ বলের মোকাবিলায় ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরির দেখা পান।

অবশ্য ব্যক্তিগত ৭৩ রানে মিচেলের একটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেন জসপ্রীত বুমরাহ। এর আগে ব্যক্তিগত ৬০ রানেও উইকেটকিপার লোকেশ রাহুল ক্যাচ ফেলে দিলে বেঁচে যান মিচেল। দুইবার জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। কিন্তু শেষ ছয় ওভারে রান তোলার গতি কমে যায় কিউইদের। সেই চাপে একের পর এক উইকেটও হারায় তারা।

শেষ ৬ ওভারে কিউইরা মাত্র ৩০ রান তুলতেই হারায় ৬ উইকেট। এর মধ্যে সেট ব্যাটার ড্যারিল মিচেলকে শেষ ওভারের পঞ্চম বলে ফিরিয়ে নিজের পাঁচ উইকেট পূরণ করেন শামি। মিচেলের ব্যাট থেকে আসে ১২৭ বলে ১৩০ রান; হাঁকান ৯টি চার ও ৫টি ছক্কা। নিউজিল্যান্ডের শেষ পাঁচ ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।

ভারতের কুলদিপ উইকেট পেয়েছেন ২টি এবং বুমরাহ ও সিরাজ পেয়েছেন ১টি করে উইকেট। পাঁচ উইকেট নেওয়া শামি দলে ফিরেই পেলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।